ইতিহাস-ঐতিহ্য

দিনটি আজ সিঙ্গেলদের- শিমন আহমেদ বাদল

দিবসের রঙিন উন্মাদনার পরই ১৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্বজুড়ে পালিত হয় সিঙ্গেলস অ্যাওয়ারনেস ডে বা একক সচেতনতা দিবস। দিনটির লক্ষ্য একাকিত্বকে করুণার চোখে দেখা নয়, বরং স্বাধীনতা ও আত্মসন্তুষ্টির সঙ্গে উদযাপন করা। সঙ্গী নেই এমন মানুষদের জন্য এই দিনটি বিশেষভাবে উৎসর্গিত, যারা হয়তো নিজের ইচ্ছায় সিঙ্গেল, অথবা জীবনের নানা পরিস্থিতিতে একা। এমনকি বয়সের ভারে একাকী থাকা ব্যক্তিরাও এই দিনে নিজেকে সময় দেওয়ার প্রেরণা পান।

দিনটির সূচনা হয়েছিল ২০০১ সালে আমেরিকার এক হাই স্কুল ছাত্র ডাস্টিন বার্নসের হাত ধরে। ভালোবাসা দিবসের প্রেম-উত্তেজনার মধ্যে যেন একাকীরা নিজেদের হতাশ না ভাবেন, বরং সঙ্গীহীন জীবনকে স্বাধীনতার সুযোগ হিসেবে দেখতে পারেন—এই ভাবনা থেকেই তার উদ্যোগে জন্ম নেয় সিঙ্গেলস অ্যাওয়ারনেস ডে। মূলত সমাজের সেই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করাই ছিল উদ্দেশ্য, যেখানে সঙ্গীর অভাবকে ‘অসম্পূর্ণতা’ বলে চিহ্নিত করা হয়।

দিনটি পালনের মূল বার্তা হলো আত্মপ্রেম ও স্বাধীনচেতা জীবনদর্শন। এটি সামাজিক চাপের বিরুদ্ধে একটি নিরব বিদ্রোহও বটে, যেখানে ব্যক্তিকে বোঝানো হয়—সঙ্গী ছাড়া জীবন যেন ‘অর্ধেক’। কিন্তু এই দিনে একাকীরা নিজের পছন্দের বই, গান, সিনেমা বা শখের কাজে সময় কাটান, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেন, কিংবা নিজেকে উপহার দেন বিশেষ কিছু। এ যেন নিজের জীবনকে নিজের মতো করে সাজানোরই একটি উৎসব।

সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, দিনটির গুরুত্ব ক্রমেই বাড়ছে ডিজিটাল যুগে একাকীত্বের অনুভূতি বাড়ার প্রেক্ষাপটে। অনেকেই এখন সঙ্গীহীন জীবনকে ‘সমস্যা’ নয়, বরং আত্মউন্নয়নের সময় হিসেবে দেখছেন। সিঙ্গেলস অ্যাওয়ারনেস ডে শুধু একটি দিন নয়, এটি যেন আত্মসচেতন হয়ে বাঁচার দর্শনেরই প্রতীক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button