সোনাতলায় আটোভ্যানের ব্যাটারী চুরি হওয়াকে কেন্দ্র করে কিশোরকে মারধর

নুরে আলম সিদ্দিকী সবুজ, সোনাতলা (বগুড়া) প্রতিনিধি
অটোভ্যানের ব্যাটারি চুরির অপবাদ অন্যের ঘারে চাপাতে জোরপূর্বক মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ে নিরব হোসেন নামের এক কিশোরকে তুলে নিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে ব্যাপক শারীরিক নির্যাতন করেছে চার যুবক। পাশাপাশি জোরপূর্বক নেয়া স্বীকারোক্তির ভিডিও মোবাইলে ধারণ করার চেষ্টাও চালিয়েছে ওই যবকরা।
অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পাওয়া এ লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাতে বগুড়ার সোনাতলার জোড়গাছা ইউনিয়নের বাঙালি নদীতীর ইলিশামারি ঘাট এলাকায়।
নিরব হোসেন ওই ইউনিয়নের উত্তর বয়ড়া (সজ্জনপাড়া) গ্রামের কামাল হোসেন এর ভাগিনা। মা-বাবার মধ্যে ডিভোর্স হওয়ায় নিরব মামাবাড়িতেই থাকে এবং স্থানীয় একটি হাইস্কুলে পড়ালেখা করে।
জানা যায়, জোড়গাছা ইউনিয়নের উত্তর বয়ড়া গ্রামে গত ১৫/২০ দিন আগে মোতাহার হোসেন বাবলু’র পালিত ছেলে রনজিত মিয়ার অটোভ্যানের চারটি ব্যাটারী চুরি হয়। প্রকৃত চোরকে ধরতে না পারলেও ওই চুরির ঘটনায় উদোর পি-ি বুদোর ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হয়।
মিথ্যা স্বীকারোক্তি দিতে অস্বীকার করলে যুবকরা তার গলায় ফাঁস দিয়ে শারিরিক নির্যাতন চালাতে থাকে।
এ সময় নিরবের চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে গেলে নির্যাতনকারীরা পালিয়ে যায়। এরপর আহত নিরবকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে পরের দিন শনিবার সোনাতলা হাসপাতালে ভর্তি করে স্বজনরা।
এ ব্যাপারে আহত নিরব জানায়, গ্রামের রনজিত মামার অটোভ্যানের ব্যাটারী চুরির ঘটনায় গ্রামের কয়েকজন নির্দোষ লোককে ফাঁসাতে আমাকে তুলে নিয়ে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ে গলায় ফাঁস দিয়ে শারিরিক নির্যাতন চালিয়েছে একই গ্রামের সন্দেশের ছেলে বাপ্পী(২০), মজনুর ছেলে রাব্বি, নাহারুলের ছেলে নাঈম ও সাহানুর আলমের ছেলে সাদ্দাম হোসেন।
এদিজে নিরবকে হাসপাতালে নেয়ার সংবাদ পেয়ে নির্যাতনকারী যুবকরা আরো ১০/১২জন অজ্ঞাত যুবকদের নিয়ে নিরবের মামা কামালের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরসহ মামি মমতা বেগম ও ছয়মাসের গর্ভবতী খালাকে মারপিট করে গুরুতর আহত করে। আহতদের সোনাতলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
এ ছাড়াও হামলাকারীরা ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাবলু মন্ডলের বাড়ি ও দোকানে ভাঙচুর- লুটতরাজ করে। এ সময় বাঁধা দিলে বাবলু ও তার স্ত্রী বেবি খাতুন আহত হয়।
এ ঘটনায় বেবি খাতুন বাদী হয়ে বাপ্পি, নাঈম, রাব্বি, মজনু, সাদ্দাম সহ ৬জনের নাম উল্লেখ ও ১০/১৫ জনকে অজ্ঞাত করে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ ব্যাপারে সোনাতলা থানার অফিসার ইনচার্জ মিলাদুন নবী জানান, সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। উভয় পক্ষই থানায় অভিযোগ দিয়েছে। আরো তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।