জয়নুল আবেদীন,সাঘাটা(গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটিতে চিকিৎসক সহ জনবল ও ঔষধ সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় করার লক্ষ্যে ১০ বছর আগে ১৯ শয্যার একটি নতুন ভবন নির্মাণ করে পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতী বরাদ্দ করা হলেও পূর্বেও চেয়েও কমছে চিকিৎসকসহ জনবল ও ঔষধ বরাদ্দ । এতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি চিকিৎসা সেবার মান উন্নীতির পরিবর্তে দিনদিন আরও অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। এতে উপজেলার বিপুল সংখ্যার দরিদ্র জনগোষ্টি সরকারি এ চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রটিতে কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা না পেয়ে শহরের হাসপাতাল, ক্লিনিক অথবা গ্রামের হাতুরে চিকিৎসকের স্বরণাপন্ন হতে গিয়ে অর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, পূর্বের ৩১ এ শয্যার জনবল তালিকা অনুযায়ী ১জন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, ১৯ ডাক্তার, ১ জন নার্সিং সুপারভাইজার, ১৩ সিঃ স্টাফ নার্স, ১ জন সহকারী নার্স সহ ১৪৬ জন জনবল থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ১ জন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা, ৮ জন ডাক্তার, ১ জন নার্সিং সুপারভাইজার সহ মাত্র ৯২ জন জনবল রয়েছে। এখনো ৫৪ জনবলের পদ খালি রয়েছে। জনবল অভাবে পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতিও কোনো কাজে আসছে না। হাসপাতালে আগত রোগিদের পরিক্ষা-নিরিক্ষা করানো হচ্ছে বাহিরের ডায়াগনেষ্টিক সেন্টারগুলো থেকে। এদিকে প্রয়োজনীয় জনবল সহ কার্যক্রম না থাকায় থাকায় স্প্রতিক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন থেকে ৫০ শয্যার শব্দটি মুছে ফেলে শুধু সাঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স লেখা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ঘুড়িদহ গ্রামের আলাতাব হোসেন এর মেয়ে আশা আক্তার কে (২২) ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে তাকে গত ৩০ জুলাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর শুধু খাওয়ার স্যালাইন দেয়া হয়েছে। এছাড়া অন্য কোনো স্যালাইন বা ঔষধ দেয়নি হাসপাতাল থেকে। সব ঔসধ স্যালাইন বাহির থেকে কিনতে হচ্ছে। ৩১ জুলাই ভর্তি করা হয় ঝাড়াবর্ষা গ্রামের ডায়রিয়ার রোগী ফরিদা আক্তার,পাকুরতলা গ্রামের রেজিয়া বেগম,
জ¦র নিয়ে মাহিনকে এবং দীঘলকান্দি গ্রামের সাহাদত হোসেন সহ আরও অনেকেই ভর্তি ছিলেন। তারা সবাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ঔষধ না পাওয়ার অভিযোগ করেন। এছাড়াও বহিরাগত রোগীদের ক্ষেত্রেও একই চিত্র লক্ষ করা গেছে,প্রতিদিন এবিভাগের বিভিন্ন বষসের ৩ থেকে ৪ শত রোগী চিকিৎসা নিতে আসে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে । কিন্তু চিকিৎসক সংকটের কারণে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও চিকিৎসা সেবা ছাড়াই রোগীদের ফিরে যেতে হচ্ছে। কেউ কেউ চিকিৎসকের ব্যবস্থা পত্র পেলেও তাদের ভাগ্যে মিলছে না প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র। ফলে খালি হাতেই ফিরে যেতে হচ্ছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে। গত বুধবার বহি:বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা কয়েক জন রোগীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, নাপা, প্যারাসিটামল, ক্যাসিয়াম দিয়েছে। বেশির ভাগ রোগিদের অভিযোগ ব্যবস্থাপত্র দিয়ে বাহির থেকে ঔষধ কিনতে বলা হচ্ছে। সূত্রে জানা গেছে, সাঘাটা উপজেলাটি যমুনা,ব্রহ্মপুত্র ও আলাই নদী দ্বারা বেষ্টিত হওয়ায় এ উপজেলায় ১০টি ইউনিয়নে প্রায় চার লাখ মানুষের অধিকাংশই দরিদ্র। তাদের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসাস্থল সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এছাড়াও পাশর্^বর্তী ফুলছড়ি উপজেলার চরাঞ্চলের ফুলছড়ি ও গজারিয়া এ দুটি ইউনিয়ন ভৌগলিক দিক থেকে নিকটে হওয়ায় সেখানকার মানুষও চিকিৎসা নিতে আসে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে । কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে প্রয়োজনীয় ঔষধ,চিকিৎস সহ জনবল না থাকায় তারা কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছে না। রোগিদের ঔষধ ও স্যালাইন না পাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে দায়িত্বরত আরএমও ডা: রিয়াদ মাহমুদ ঔষধ সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, গত ঈদের সময় মানুষ নিজ ঘরে ফেরৎ আসার কারণে রোগীর চাপ ধারণার চেয়েও বেশি হয়ে ছিলো। ফলে কিছুদিন ঔষধ সংকট হয়েছিলো। বর্তমানে সংকট নেই রোগিরা এখন ঔষধ পাচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও প:প: কর্মকর্তা ডা: ইলতুতমিশ আকন্দ (পিন্টু) এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি অল্প কিছু দিন হলো যোগান করেছি এখনো কোনো কিছুই বুঝে ওঠা হয়নি। একটু সময় দেন সব ঠিক হয়ে যাবে।