সারাদেশ

সাঘাটায় ব্রিজ নির্মাণ কাজে ধীরগতি, বিকল্প ব্রিজ ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

জয়নুল আবেদীন, সাঘাটা(গাইবান্ধা) প্রতিনিধি

গাইবান্ধা-বোনারপাড়া সড়ক সংলগ্ন সাঘাটা উপজেলার পদুমশহর ইউনিয়নের বাদিয়াখালী কাজীবাড়ি সড়কে মফুরজান নামক আলাই নদীর ওপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর-এর আওতায় নির্মাণাধীন ফুটব্রিজ সংলগ্ন বিকল্প (পুরাতর) ব্রিজটি ভেঙে খালে পড়ার প্রায় এক সপ্তাহ হলেও পারাপারের জন্য হয় বিকল্প ব্যবস্থা। অতি গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। গত শুক্রকার সকাল অনুমান আটটার সময় বিকল্প (পুরাতন) ব্রিজটির পূর্ব অংশ ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। নদী পারাপারের আশপাশে আর কোনো বিকল্প সেতু না থাকায় স্কুলগামী শিশু শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধদের পর্যন্ত সাঁতরিয়ে নদী পার হয়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বাদিয়াখালী কাজীবাড়ি সড়কে মফুরজান নামক এলাকায় আলাই নদীর ওপর পুরাতন সরু ব্রিজটি অত্যন্ত দুর্বল ও যানবাহন চলাচলের জন্য অনুপোযোগী ঝুঁকিপুর্ণ হওয়ায় তা পরিত্যক্ত ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ৪ কোটি ৪৭ লাখ ১ হাজার টাকা ব্যায়ে ৬২ মিটার দৈর্ঘ্য একটি পিসি গার্ডার ফুট ব্রীজ নিমার্ণ কাজ হাতে নেয়। পুরাতন ব্রিজটি বিকল্প হিসেবে চালু রেখে পাশে গত বছর ১২ ফেব্রুয়ারী নতুন ব্রিজটির কাজের উদ্বোধন করা হয়। সাব ঠিকাদার-এর মাধ্যমে কাজ আরম্ভ করে চলতি বছর ১২ মে এর মধ্যে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করার কথা ছিলো। কিন্তু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের গড়িমসি ও এলজিইডির কর্মকর্তদের গাফিলতির কারণে এখনও ২০ ভাগের বেশি এগোয়নি ব্রিজের নির্মাণ কাজ ।
এদিকে ঠিকাদার নতুন ব্রিজের কাজ করার সময় পুরাতর ব্রিজের পিলারের নিচ থেকে বালু উত্তোলন করায় একটি পিলারসহ ব্রিজটির একাংশ ভেঙে পড়ে। ফলে দুপারের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ফলে নদীর দুপারের ভুক্তভোগি জনসাধারণের অভিযোগ পুরাতন ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। একারণে শিশুসহ সকল শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, জনসাধারণ হাট-বাজারে বা কোনো গন্তব্যে যেতে পারছে না। স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, এলজিইডির কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের খামখেয়ালীতে পুরাতন ব্রিজটি ভেঙে পড়েছে। তাঁরা ইচ্ছা করেই বিকল্প (পুরাতন) ব্রিজ থেকে দুরত্ব না রেখে নতুন ব্রিজ নির্মাণ কাজ করতে গিয়ে ব্রিজের পিলারের নিচ থেকে মাটি উত্তোলন করেছেন বলেই পুরাতন ব্রিজটি ভেঙে পড়েছে।
পদুমশহর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মফিজুল হকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে খাল পারাপারের জরুরি ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পরিষদ থেকে এলজিইডির গাইবান্ধা জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী এবং সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু তাদের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সারা মেলেনি। কাজে সাব ঠিকাদার জুয়েল মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি কাজে গাফিলতির কথা অস্বীকার করে বলেন, স্থানীয়দের সাথে ব্রিজের জায়গা নিয়ে সমস্যার কারণে গত ৮ মাস দেড়ি হয়েছে, এখন আবার বর্ষা, বন্যার কারণে কাজ করা যাচ্ছে না। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর-এর গাইবান্ধা নির্বাহী প্রকৌশল সাবিউল ইসলাম বলেন, জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘবে বিকল্প ব্রিজটির ভেঙে পড়া অংশে জরুরি ভিত্তিতে কাঠের সাঁকো দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দুই -একদিনের মধ্যে চলাচল স্বাভাবিক হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button