সারাদেশ

সাঘাটায় সবুজ বাংলা জেনারেল হাসপাতাল ভুল অপারেশনে নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ

জয়নুল আবেদীন,সাঘাটা (গাইবান্ধা)প্রতিনিধি

গাইবান্ধার সাঘাটায় বোনারপাড়াস্থ সবুজ বাংলা জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তার ভুল অপারেশনে নবজাতক হত্যা,প্রসূতির মূত্রথলি কেটে বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে । প্রতিকারের জন্য প্রসূতির পরিবার সিভিল সার্জনের নিকট এ অভিযোগ দায়ের করেন। ক্ষতিগ্রস্ত প্রসূতি উপজেলার কামালের পাড়া ইউনিয়নের গোরের পাড়া গ্রামের কফিল উদ্দিনের স্ত্রী নাজমা বেগম।
অভিযোগে তিত্ন উল্লেখ করছেন, তিনি তার সন্তান সম্ভাবা স্ত্রী মোছাঃ নাজমা বেগম (৩২) গত ১৮ মে প্রসব ব্যথা অনুভব হলে সবুজ বাংলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ রায়হান সোবহান, ডাঃ রাশেদুনবী উপস্থিত থেকে গভীর রাতে নাজমাকে আলট্রাসনোগ্রাম এবং কোনো পরীক্ষা ছাড়াই অপারেশন করেন। অপারেশনের সময় গর্ভে নবজাত মারা যায় এবং নাজমার গুরুতর অসুস্থ্ হয়ে পড়ে। পারদিন ভোরে ঘটনা বেগতিক দেখে হাসপাতালের কতব্যরত চিকিৎসকগণ প্রসূতি নাজমাকে দ্রুত বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করাতে হবে, একথা বলে তারা নিজেরা এ্যাম্বুলেন্স ডেকে সেখান থেকে তড়িঘড়ি ভাবে প্রসূতিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বিদায় করে দেন। কিন্তু বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কতব্যরত চিকিৎসক নাজমার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তার উন্নত কিচিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শদেন। কিন্তু টাকার অভাবে ঢাকায় নিতে না পেরে নাজমার স্বামী এলাকার একজন লোকের সহায়তায় নাজমাকে বগুড়া ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করেন। সেখানে পরীক্ষা করে সবুজ বাংলা জেনারেল হাসপাতালের প্রসূতির মুত্রথলি কেটে বিচ্ছিন্ন করা সহ ভুল অপারেশনে রোগির মারাত্মক ক্ষতির বিষটি ধরাপড়ে। এঘটনায় সবুজবাংলা জেনারেল হাসপাতালের কতব্যরত চিকিৎসক সহ কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে সাঘাটা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নাজমার বড় ভাই।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ ঘটনার বিষয়ে তদন্তে গেলে অভিযুক্ত হাসপাতাল কতৃপক্ষ ঘটনা স্বীকার করেন এবং প্রসূতি নাজমাকে ঢাকায় নিয়ে তাদের খরচে উন্নত চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ্য করার আশ্বাস দেন। এতে নাজমার পরিবার থেমে যায় এবং তাদের কথামতো বগুড়া ক্লিনিক এন্ড ডায়াহনষ্টিক সেন্টার হতে নাজমাকে গত ২৪ মে ঢাকা উত্তরার নস্ট্রাম হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ভর্তি করেন। সেখানে সময় সবুজবাংলা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রাশেদুনবী প্রথমে উপস্থিত থাকলেও ২/১ দিন খোঁজখবর নিয়ে পরবর্তীতে তারা সটকে পড়েন। এদিকে সেখানে কতব্যরত চিকিৎসক জানান বিচ্ছন্ন মূত্রথলির অপারেশন ৩ মাস পরে করতে হবে এ কথা বলে প্রসূতি নাজমাকে অসুস্থ্য অবস্থায় সেখান থেকে ছুটি দিয়ে দিলে নাজমার অসহায় স্বামী বাড়ি থেকে সংসারের গরু-ছাগল হাঁস-মুরগী, জিনিপত্র বিক্রি ও ধারদেনা করে ক্লিনিকের অর্থ পরিশোধ করে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
ভুল অপারেশনের বিষয়ে সবুজ বাংলা জেনারেল হাসপাতালের ডাঃ রাশেদুন্নবীর সাথে কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সন্তান প্রসূতির গর্ভে আগেই মারা গেছে। তবে অপারেশনের সময় মূত্রথলি কেটে বিচ্ছিন্ন হয়েছে ,আমরা তা অপারেশনের জন্য খরচ বহন করতে চেয়েছি সেটা আমাদের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে। এতে রোগির লোকজন রাজি হয়নি। গাইবান্ধা জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ কানিজ সাবিহার সাথে কথা হলে তিনি এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করা হয়েছে এখন হাসপাতালটি বন্ধের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button