সাঘাটায় রাস্তার কাজ বন্ধ রেখে ঠিকাদার লাপাত্তা: জনদুর্ভোগ চরমে

জয়নুল আবেদীন,সাঘাটা(গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া চৌ-মাথা হতে কচুয়াহাট এলাকার সাঘাটা-গাইবান্ধা সড়ক পর্যন্ত রাস্তাটির উন্নয়ন কাজ বেশির ভাগ বন্ধ রেখে পালিয়েছে ঠিকাদার। বিগত গত ২০২১ সালের জুন মাসে এ রাস্তার কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে। কিন্তু কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় জন দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। রাস্তায় রোলিং করা খোঁয়া যানবাহনের চাকার ঘর্ষনে ইটের গুঁড়াযুক্ত ধুলা দুষিত করে ফেলেছে রাস্তা সহ আশেপাশের পরিবেশ। প্রতিনিয়ত এ রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে স্কুলগামী শিশু শিক্ষার্থী সহ অসংখ্য মানুষ । দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার এমন অবস্থা চলতে থাকায় ভুক্তভোগি মানুষের মধ্যে চরমক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, সাঘাটা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) আওতায় বিগত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রুরাল কানেকটিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের আওতায় বোনারপাড়া জিসি-কচুয়াহাট পর্যন্ত ৬ হাজার ৪ শ’ মিটার সড়কের সংস্কার সহ উন্নয়ন কাজের টেন্ডার হয়। রাস্তাটি প্রশস্তকরণ, রাস্তার দু’পাশের আবাদি জমির পানি নিস্কাশনের জন্য ৪টি বক্সকালভার্ট নির্মাণ, ৪টি ইউড্রেন ও গাইডওয়াল নির্মাণ সহ কার্পেটিংয়ের জন্য ৫ কোটি ৬৫লাখ ৭৩ হাজার ৭৩৬ টাকা বরাদ্দ হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ পায় ঢাকার ধানমন্ডির মেসার্স এইচটিবিএল-সিসিসিজেভি নামক একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। বিগত ২০২১ সালের জুন মাসের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করার কথা। সে মোতাবেক ঠিকাদার ২০১৯ সালের ১৮ অক্টোবর কাজ শুরু করেন। কিন্তু রাস্তার বেশির ভাগ কাজ অসমাপ্ত রেখেই এলাকা থেকে ঠিকাদা পালিয়ে যান।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার হুট করে রাস্তার কাজ বন্ধ রেখে চলে গেছেন। স্থানীয়রা জানান, উপজেলার চরাঞ্চলসহ সাঘাটা, মুক্তিনগর, হলদিয়া ও বোনারপাড়া ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের জনসাধারণ এ রাস্তায় চলাচল করে। কিন্তু রাস্তার এমন দুরবস্থার কারণে উপজেলা শহর বোনারপাড়ায় যাতায়াত করতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন জনসাধারণ। ওই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী কচুয়াহাট এলাকার ভ্যানচালক আসাদুল ইসলাম জানান, রাস্তার কাজ ফেলে রাখায় খোঁয়ার উপর চলতে মানুষের যেমন কষ্ট হচ্ছে, তেমনি ভ্যানের টায়ার খুব তারাতারি নষ্ট হচ্ছে। রাস্তাটি দিয়ে চলাচলকারী খামার ধনারুহা গ্রামের বাসিন্দা আছান আলী আক্ষেপ করে বলেন, এ রস্তাটির উন্নয়ন কাজ শুরু না হওয়াই ভালো ছিলো। এখন এটি এলাকার মানুষের গলার কাঁটা। দীর্ঘদিন ধরে কাজ বন্ধ থাকা দু:খজনক বলেও জানান তিনি। স্থাানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আহসান হাবিব লায়ন বলেন, রাস্তাটি দীর্ঘদিন যাবৎ অচল অবস্থায় রয়েছে। রাস্তার ইটের খোঁয়ার গুঁড়াযুক্ত ধুলা রাস্তা ও আশেপাশের পরিবেশ দুষিত করে ফেলেছে। রাস্তার কাজ দ্রুত সমাপ্ত করার জন্য পদক্ষেপ নেয়া জরুরী বলে জানান তিনি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর গাইবান্ধা জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলাম জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি নেওয়ার পর থেকেই এ জটিলতার সৃষ্টি করেছে। এ ব্যাপারে আমরা অফিসিয়াল ভাবে উপরে লিখেছি, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। তিনি ঠিকাদারের ক্ষতার দাপটের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, বারবার তাগিদ দেয়ার পরেও রাস্তার কাজ সমাপ্তের বিষয়টি তারা আমলে নেননি। তবে ঠিকাদার পরবর্তীতে তাঁর নিজের চেষ্টায় কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি করে নিয়েছেন বলে জানান তিনি।