জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় ১ম হলো সোনাতলার রাকিব


মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব, বগুড়ার সোনাতলার এক মেধাবী তরুণ, সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ডি ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করে সবার নজর কেড়েছেন। ২৩ মার্চ রবিবার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, তিনি ডি ইউনিটে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন। এছাড়াও, তিনি জবির বি ইউনিটে ১২৮তম স্থান অর্জন করেছেন। তার এই সাফল্য তার কঠোর পরিশ্রম, আত্মবিশ্বাস এবং পরিবারের অক্লান্ত সমর্থনের ফল।
রাকিবের শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছিল জাহাঙ্গীর আলম গুড মর্নিং কেজি স্কুলে। এরপর তিনি মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন সরকারি সোনাতলা মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে এবং উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা করেন সরকারি আজিজুল হক কলেজে। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী রাকিব স্বপ্ন দেখতেন উচ্চশিক্ষা গ্রহণের, যা তাকে দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে।
রাকিব দেশের বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তার মেধার প্রমাণ রেখেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ইউনিটে (কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ) তিনি ৩৩৭তম স্থান অর্জন করেছেন। এই ইউনিটে বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাসসহ মোট ৪৪টি বিভাগ রয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ইউনিটে (সমাজবিজ্ঞান ও আইন অনুষদ) তিনি ৩৬তম স্থান এবং সি ইউনিটে ২৪তম স্থান অর্জন করেছেন। বি ইউনিটে অর্থনীতি, ভূগোল ও পরিবেশ, সরকার ও রাজনীতি, নৃবিজ্ঞান, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা, লোক প্রশাসন এবং আইন ও বিচার বিভাগসহ মোট ৭টি বিভাগ রয়েছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি ইউনিটে (সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ) তিনি প্রথম স্থান অর্জন করেছেন এবং বি ইউনিটে (কলা ও আইন অনুষদ) ১২৮তম স্থান অর্জন করেছেন।
রাকিবের এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে এক গভীর সংগ্রামের গল্প। তার বাবা, খাজা খন্দকার, আজ আর পৃথিবীতে নেই। বাবার মৃত্যুর পর মা রাশেদা বেগম এবং বড় বোনদের অক্লান্ত সমর্থন ও উৎসাহই ছিল রাকিবের এগিয়ে যাওয়ার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। রাকিব বলেন, “এই সফলতায় আমার সবসময় নিজের প্রতি প্রবল আত্মবিশ্বাস ছিল, অনেক রাতজাগা পরিশ্রম ছিল। প্রধানত বাবা-মায়ের অক্লান্ত পরিশ্রম আমাকে অনুপ্রাণিত করত। বাবার মৃত্যুর পর আমার মা ও আপুদের সাপোর্ট না থাকলে হয়তো স্বপ্নটাই দেখা হতো না।”
রাকিব তার মেধাকে শুধু নিজের সাফল্যের জন্য সীমাবদ্ধ রাখতে চান না। তিনি ভবিষ্যতে সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়ে দেশের সেবা করতে চান। তার মতে, একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করলে দেশের জন্য সরাসরি অবদান রাখা সম্ভব।
সোনাতলার এই মেধাবী তরুণের গল্প আমাদের শেখায় যে স্বপ্ন দেখতে জানতে হয়, স্বপ্ন পূরণে পরিশ্রম করতে জানতে হয়। তার এই সাফল্য শুধু তার নিজের নয়, বরং এটি আরও অনেক তরুণকে অনুপ্রেরণা দেবে—স্বপ্ন দেখতে, পরিশ্রম করতে এবং সফলতার শিখরে পৌঁছাতে। রাকিবুল ইসলাম রাকিবের এই অনুপ্রেরণামূলক গল্প নতুন প্রজন্মকে স্বপ্ন দেখার সাহস দেবে, তাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে, আর রাকিব হয়ে উঠবেন ভবিষ্যতের সম্ভাবনাময় এক আলোকবর্তিকা।