সারাদেশ

সাঘাটার হলদিয়ায় ভেঙ্গে পড়েছে শিক্ষাব্যবস্থাঃ সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে উৎকণ্ঠায় অভিভাবকরা

জয়নুল আবেদীন, সাঘাটা(গাইবান্ধা) প্রতিনিধি

 

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া বেড়া আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের জায়গা ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি নিয়ে বিরোধ চরমে ওঠায় বিদ্যালয়টিতে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। এছাড়া বিদ্যালয়ে শিক্ষক উপস্থিত না হওয়া এবং অনুকুল পরিবেশ না থাকায় বিদ্যালয়টি এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে এ অচল অবস্থা চলতে থাকায় সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ উৎকন্ঠা ।
জানা যায় ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হলদিয়া বেড়া আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টিতে জমি ও কমিটি গঠন নিয়ে স্থানীয়দের সাথে প্রধান শিক্ষকের দীর্ঘদিন চলমান বিরোধের কারণে বিরোধী পক্ষটি বিদ্যালয়ের বারান্দা ঘেষে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে দখল করে মাঠে গাছ রোপন করেছে। ফলে মাঠের অভাবে শিক্ষার্থীদের হয়না পি,টি প্যারেড ও খেলাধুলা পাশাপাশি শিক্ষকদের অনুপস্থিতি থাকায় বিদ্যালয়ে না হয় পাঠদান। ফলে শিক্ষার পরিবেশ বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত।
গত সোমবার (১৮ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় বিদ্যালয়ের এমন অচল অবস্থার কথা । বিদ্যালয়ে শিক্ষক -শিক্ষার্থীরা কেউ উপস্থিত ছিলোনা। বিদ্যালয়ের ক্লাস কক্ষ ও অফিস কক্ষ সব গুলো ছিলো তালাবদ্ধ । এ পরিস্থিতি দেখে সাংবাদিকরা বিদ্যালয়ের ছবি তোলার সময় বিদ্যালয়ের দপ্তরি আব্দুর রউফ তরিঘড়ি করে অফিস খুলে এবং জাতীয় পতাকা তোলেন। তাকে বিদ্যালয় বন্ধের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রায় প্রতিদিনই এ অবস্থা হয়। নিয়মিত স্যারেরা স্কুলে আসেননা। ছাত্রীরা আসে কিন্তু পড়াশুনা না হওয়ায় তারা ফিরে যায়। আজও স্যারেরা কেউ আসেননি, ছাত্রীরা বেলা ১২টা পর্যন্ত থেকে ফিরে গেছে। দপ্তরির সাথে কথা বলতেই সাংবাদিকদের উপস্থিতি জেনে আশেপাশের স্থানীয় কয়েকজন লোক এগিয়ে আসেন। তাদের মধ্যে একজ অভিভাব মতিয়ার রহমান জানান, আমার মেয়ে এই স্কুলে ৭ম শ্রেণীতে পড়ে, শিক্ষকরা নিয়মিত আসেন না স্কুলে পড়াশুনাও হয়না। এমতাবস্থা মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় আছি। অভিভাবক মুসলিমা বেগম জানান, আমার মেয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে, স্কুলের এই অচল অবস্থা,পড়াশুনা নেই , এখন মেয়েকে কোথায় ভর্তি করাবো তা ভেবে স্থির করতে পারছি না। শিক্ষক ও কর্মচারী উপস্থিত না থাকা সহ বিদ্যালয়ের অচল অবস্থার ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রজ্জাককের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন, তিন দিনের ট্রেনিংয়ের জন্য আমি গাইবান্ধায় অবস্থান করছি। অন্যান্য শিক্ষক ও কর্মচারী বিদ্যালয়ে কেন উপস্থিত হয়নি এব্যাপারে আমার জানা নেই। তবে জমি দাতারা অন্যায় ভাবে বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে রেখেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন । এবিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আহসান হাবিব এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি নিয়ে স্থানীয়দের সাথে প্রধান শিক্ষকের একটা বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানি। তবে বিদ্যালয়ে শিক্ষক অনুপস্থিত থাকা বা পাঠদান বন্ধ রাখা ঠিক নয়। এমন হয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button