সারাদেশ

বিদ্যুতের ঘনঘন লোডশেডিংয়ে সাঘাটার জনজীবন বিপর্যস্ত

জয়নুল আবেদীন,সাঘাটা(গাইবান্ধা) প্রতিনিধি

 

গরমের তাপদাহের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। ফলে অসহনীয় হয়ে উঠেছে জনজীবন। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকদের অভিযোগ, সারা দিনে মাত্র কয়েক ঘণ্টা এলাকায় বিদ্যুৎ থাকছে। সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো লোডশেডিং নিয়ে সরব। তবে স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দাবি চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ায় বাধ্য হয়ে লোডশেডিং করতে হচ্ছে তাদের।
গাইবান্ধার সাঘাটায় চাহিদার চেয়ে প্রায় প্রতিদিনই ১২ থেকে ১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি থাকায় লোডশেডিং বেশী হচ্ছে। শহর ও কলকারখানা এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে আবাসিক এলাকায় অধিক লোডশেডিং করা হচ্ছে। এ কারণে গত কয়েক দিনের লোডশেডিংয়ে নাভিশ্বাস উঠেছে সাঘাটা উপজেলার এক লাখ ২০ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক পরিবারের।
বিদ্যুতের গ্রাহক ব্যবসায়ী সুলতান মাহমুদ সুমন বলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। গরম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেড়েছে। এ কারণে ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি মিলছে না। গরমে আমরা খুব কষ্টে আছি। উপজেলা গ্রাহক ও সেচপাম্প মালিক সমিতির সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদ জানান, ঘন্টায় ঘন্টায় বিদ্যুতের লোডশেডিং হচ্ছে। অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে লোকজনের ফ্রিজের সংক্ষণ করা মাছ,মাংস সহ কাঁচা শাক সবজি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় থেমে থেমে লোডশেডিং, চলে রাতভর। প্রচন্ড ভ্যাপসা গরমের মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকায় লোকজনের নাভিশ্বাস উঠেছে।
কিছু দিন আগেই বিদ্যুৎ সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও অতিসম্প্রতি পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে গ্রাহকরা। গ্রাহকদের অভিযোগ বিদ্যুৎ থাক বা না থাক মাস শেষে মোটা অঙ্কের বিদ্যুৎ বিল ধরিয়ে দিতে ভুল করে না বিদ্যুৎ বিভাগ। অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক না থাকলেও বিল বেড়েই চলেছে। আবার এক মাস অথবা সর্বোচ্চ দুই মাস বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়লেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে দেড়ি করেন না বিদ্যুৎ বিভাগের লাইনম্যানরা। পল্লী বিদ্যুতের বোনারপাড়া জোনাল অফিসার কামরুজ্জামান বলেন, সমস্যাটা সারা দেশের, এটি শুধু সাঘাটার জন্য নয়।
এদিকে সাঘাটায় লোডশেডিংয়ে গ্রামের কোথাও শিডিউল মানা হচ্ছে না বলে গ্রাহকদের অভিযোগ। উপরন্তু বিদ্যুৎ ব্যবহার না করেও গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত বিল। কেন এ ভূতুড়ে বিল তার জবাবও পাচ্ছেন না গ্রাহকেরা। এ ক্ষেত্রে গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বোনারপাড়া জোনাল অফিস বা উপকেন্দ্রে অথবা অভিযোগ অফিসগুলোতে ফোন করলে ফোনও রিসিভ করছেন না তারা। কদাচিৎ ফোন রিসিভ করলে ভাবখানা এমন দেখান যেন লোডশেডিং নেই। টানা দুই সপ্তাহ ধরে সমিতির আওতাধীন সাঘাটা উপজেলায় গড়ে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ ছিল না। অতিমাত্রার লোডশেডিংয়ের কারণে ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্পে উৎপাদন ব্যাহত, শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় ব্যাঘাত এবং ব্যবসায়ীসহ আবাসিক বাসিন্দারা পড়েছেন বিপাকে। গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বোনারপাড়া জোনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, সাঘাটায় বর্তমানে ১ লাখ ২০ হাজার গ্রহক রয়েছে। ২০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে মাত্র ৭-৮ মেগাওয়াট সরবরাহ করা হচ্ছে। যার জন্য লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button