শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি

বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায় বেড়ে ওঠা তরুণ কথাসাহিত্যিক সেলিম হাসান

বগুড়া বার্তা ডেস্কঃ

কলমের কালিতে কথা বলা মানুষ সেলিম হাসানের পৈতৃক নিবাস বগুড়া জেলার সোনাতলা উপজেলায়। তাঁর বাবা মুহাম্মদ ফেরদাউস প্রামানিক পেশায় গ্রামের অতি দরিদ্র এক কৃষক, তিনি অন্যের জমিতে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। অজস্র অভাব অনটনে কেটেছে জীবনে বেশিরভাগ সময়, প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকা এই পরিবারের পাচঁ সদস্যের। সেলিম হাসান ফেরদাউস প্রামানিকের প্রথম নন্দন। ছোট্ট বেলা থেকেই সে তীক্ষ্ণ মেধাবী, শৈশব কৈশোর কাটিয়ে নানা-নানীর বাড়িতে। সাহিত্যের পোকা ছোট্টবেলা থেকেই তার মস্তিকে গেঁথে ছিল, সেই পাঠ্যবইয়ের গল্প থেকে সাহিত্যের প্রতি অগাধ ভালোবাসা জন্মে। ছোটোবেলা থেকে লেখালেখির প্রতি ভীষণ ঝোঁক ও ভালোবাসা প্রচুর। সেই ভালোবাসা থেকেই কলমের এক দু’ফোঁটা কালির আঁচড়ে সাজান গদ্য-পদ্য। নিজের সবটুকুন আবেগ ভালোবাসা দিয়ে লিখেন প্রতিটি লাইন-বাক্য। তাঁর লেখা সাদামাটা ও ঝরঝরে। যেন অদ্ভুত রকমের জাদু রয়েছে এই মানুষটির লেখায়। সেলিম হাসানের প্রথম বই নীলাবতী নীলাঞ্জনা অমর একুশে গ্রন্হমেলা ২০২২-এ সময়ের সুর প্রকাশন কর্তৃক প্রকাশিত হয়। এটি একটি সামাজিক উপন্যাস, উপন্যাসটি পাঠক মহলে খুব সাড়া ফেললে পরের বছরেরই তিনি থ্রিলার জনরার উপন্যাস “প্রতিটি রাতই ভয়ংকর ছিল” প্রকাশ করেন। বইটি পাঠক মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলে। বইটির সফলতার জন্য পাঠকমহলে লেখক বেশ প্রংশসিত হয়েছেন। বইমেলায় প্রথম সংস্করণ বিক্রিত হলে দ্বিতীয় সংস্করণ বের করা হয়। ২০২৩ সালে তার বহুল পাঠকপ্রিয় বই “যে গল্প আজও ছাপা হয়নি”প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই পাঠকমহলে খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর লেখা পড়লে এক অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করে। তাঁর প্রতিটি লেখা গিয়ে রেখা টানে মনের অতল গহীনে!তাঁর লেখা গল্প-ছড়া-কবিতা বিভিন্ন অনলাইন ম্যাগাজিন, পত্রিকায় বরাবর প্রকাশ হয়ে আসছে।
তিনি বলেন— এখন আমার চলার পথ সরল হলেও একটা সময় ভিষণ বাঁকা ছিল, অজস্র বাঁধা ছিল। বন্ধুবান্ধব থেকে শুরু করে এমনকি অনেক আত্মীয় স্বজনরা আমাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করত, লেখালেখি করে কি আর সংসার হবে তারচেয়ে বরং তুমি সময়টা কাজে লাগাও এমন অসংখ্য মন্তব্য আমাকে স্বপ্নের পথে এগিয়ে যেতে দেয়নি, ভীষণ হতাশায় শেষ হতে চলছিল আমার সাহিত্য যাত্রা। তবে আলহামদুলিল্লাহ! আমার মনোবল ভাঙ্গেনি, আমি চেষ্টা করেছি, আল্লাহ চেয়েছিলেন তাই আমি আজ সেলিম হাসান হতে পেরেছি। খুব শীঘ্রই আমার পাঠকদের জন্য নতুন বই আসছে, আমার প্রাণ আমার পাঠকেরা তাদের কাছে আমি চিরঋণী। আমি তাদের ভালবাসায় বরাবরই মুগ্ধ হই! তাদের ভালোবাসায় এভাবেই কাটিয়ে দিতে চাই ক্ষুদ্র এ’জীবন।খুব ছোট্টবেলা থেকে দারিদ্র্যতার মাঝে আমার বেড়ে ওঠা জীবনে অনেককিছুই অপূর্ণ হ’য়ে গেছে, পূর্ণতার ঝুড়িতে রয়েছে অসংখ্য মানুষের ভালোবাসা যা আমার বুকে সাহস জুগিয়ে যাচ্ছে দিনদিন ভিষণ ভালোবাসি তোমাদের।
তার প্রকাশিতব্য বইয়ের সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন— আমি অনেক যত্নে নতুন একটি পান্ডুলিপি নিয়ে কাজ করছি দীর্ঘ সময় জুড়ে নাম–মৃত ফুল।
খুব সাদামাটা গল্প নিয়ে রচিত হবে এই সমাজিক থ্রিলার জনরার বইটি। শুধু এটুকু জানাতে চাই আমার প্রাণের মানুষদের –কিছু কিছু গল্প আমাদের মনে দাগ রেখে যায়। মিশে যায় মস্তিষ্কে, গেঁথে যায় ভাবনায়। গল্প মানেই শুধু কাল্পনিক ঘটনা তা কিন্তু নয়, আমাদের চারপাশে ঘটে যাওয়া জীবনচিত্রগুলো লেখক তার কলমের কালিতে চমৎকার করে তুলে ধরেন আর সেগুলোকে বলে সামাজিক গল্প। আমার গল্প, আমাদের সবার গল্প। সেই গল্পের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে থাকে জীবন যুদ্ধে পরাজিত অসহায় মানুষের হাহাকার। নির্যাতিত মানুষের চোখের জল, নিঃশব্দে কাঁদার ভয়ংকর যন্ত্রণা। আবার কিছু গল্প আমাদের ফুলের মতো নির্মল হতে বাধ্য করে। অসহায় মানুষের পাশে থাকা তাঁদের নিঃস্বার্থে ভলোবাসতে শেখায়। মায়ের প্রতি ভালোবাসা দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়। তেমনি এক হৃদয় নিংড়ে যাওয়া গল্প নিয়ে বইটি লিখেছি।

লেখক এভাবেই লিখে যেতে চান আগামীর দিনগুলোতেও! পাঠক/ পাঠিকা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রাপ্ত দোয়া ও ভালোবাসায়৷

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button