সারাদেশ

নওগাঁয় শিক্ষকের মাতৃত্বকালীন ছুটির সময়ের বেতন ফেরত নিলেন অধ্যক্ষ

মহসিন রেজা, নওগাঁ

নওগাঁর বদলগাছীর ধর্মপুর গোয়ালভিটা হোসেনিয়া আলিম মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক শারমীন আক্তারের মাতৃত্ব কালীন ছুটির সময়ের প্রাপ্ত বেতন-ভাতার টাকা ফেরত নিয়েছে অধ্যক্ষ মো. আনোয়ার হোসেন। এর প্রায় দেড় বছর পার হলেও ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার রশিদ দেননি ওই শিক্ষককে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষক মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে সুপারিশ পেয়ে ওই মাদ্‌রাসায় ২০২২ খ্রীস্টাব্দের ১ ফেব্রুয়ারি যোগদান করে ওই বছরের ১ মার্চ থেকে এমপিওভুক্ত হয়। যোগদানকালীন সময়ে তিনি সন্তান সম্ভবা ছিলেন বলে ওই বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে ছিলেন। এরপর অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন গত ২০২৩ খ্রিস্টাব্দের ৪ এপ্রিল জানান আমার মাতৃত্বকালীন ছুটি গ্রহণ বৈধ হয়নি, বিধায় আমার ৬ মাসের গৃহীত বেতন-ভাতা ফেরৎ দিতে হবে। এমতাবস্থায় তিনি আমার বাড়িতে গিয়ে আমার কাছ থেকে ১ লক্ষ ৪ হাজার টাকা নেন। আমি নিজে সেই টাকা ফেরৎ দিতে চাইলে তিনি জানান টাকাটি অধ্যক্ষ মারফতই ফেরৎ দিতে হবে। আমি মাদ্‌রাসার প্রভাষক মো. রেজাউল করিম স্যারের উপস্থিতিতে তাকে টাকা দেয়। পরবর্তীতে তাঁর নিকট থেকে টাকা ফেরৎ প্রদানের চালানের কপি চাইলে তিনি তা এখনও পর্যন্ত আমাকে দেন নাই বরং তা দিতে আরও ৬ মাস সময় প্রয়োজন বলে তিনি জানান । আমার মাতৃত্বকালীন ছুটি সেই সময়ে পাওনা ছিলো কিনা তা আমি জানিনা আমি একজন নবীন শিক্ষক হিসাবে বিধি না জানায় তাকে সেই টাকা দিয়েছি।

তিনি অভিযোগে আরও বলেন, গত ২১ অক্টোবর মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কার্যালয়ে বিষয়টির উপর শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত শুনানী অনুষ্ঠানে পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যে আমাকে জমার চালান দেওয়ার জন্য অধ্যক্ষ মহোদয়কে আদেশ প্রদান করেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হলেও তিনি আমাকে উক্ত টাকা ফেরৎ প্রদানের চালান কপি জমা দেননি। তাই আমার ছুটির প্রাপ্যতা থাকলে উক্ত টাকা ফেরৎ প্রাপ্তি আর প্রাপ্যতা না থাকলে ফেরৎ প্রদানের চালান কপি মহোদয়ের মাধ্যমে প্রাপ্তির আবেদন করছি।

এবিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক শারমীন আক্তার বলেন, আমি চাকরিতে নতুন হওয়ায় তিনি আমাকে ভুল বুঝিয়ে আমার কাছে থেকে টাকা নিয়েছেন। গত ২১ অক্টোবর মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে অধ্যক্ষের একটি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া তদন্ত প্রতিবেদনের শুনানি হয়। সেখানে আমি অভিযোগ দিলে মাদ্রাসা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স্যার মৌখিক ভাবে আমার কাছে থেকে নেওয়া টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার রশিদ ৭ দিনের মধ্যে আমাকে দিতে বলেন। তিনি ৭ দিন পার হলেও আমার দেওয়া টাকা বা টাকার রশিদ আমাকে দেননি। তাই আমি টাকা ফেরত পেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি অভিযোগ করেছি।

এ বিষয়ে জানতে অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে একাধিক বার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। তাই তার কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব হাসান বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button