সাঘাটায় রাস্তার অসংখ্য মূল্যবান গাছ হরিলুট

জয়নুল আবেদীন,সাঘাটা(গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রভাবশালীরা প্রকাশ্যে যার যেমন ইচ্ছ হয় সড়কের বড় বড় গাছ কেটে হরিলুট করে নিয়ে যাচ্ছে । মূল্যবান অসংখ্য সরকারি গাছ হরিলুট হলেও প্রশাসনের কোনো নজরদারি না থাকায় হতবাক এলাকার সাধারণ মানুষ। প্রশস্তকরণ কাজ চলমান গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া-জুমারবাড়ী সড়কের এই চিত্র।
সরজমিন দেখা যায়, সাঘাটা উপজেলা বোনারপাড়া- হাপানিয়া রাস্তার দুই ধারের বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় অসংখ্য কাঠ ও ফলজ গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছেন প্রভাবশালী লোকজন। সড়ক থেকে দূরে ব্যক্তিমালিকানাধীন গাছও জোর করে কেটে নিচ্ছেন তারা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিজেদের জায়গায় নিজেদের লাগানো গাছ কাটায় বাধা দিলে প্রভাবশালী লোকজন পুলিশ দিয়ে থানায় তুলে নেয়ার হুমকি-ধামকিও দিচ্ছেন তারা।
প্রকাশ্যে বিভিন্ন ধরনের ফল এবং কাঠের গাছ কেটে সাবাড় করলেও জানেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কোন প্রক্রিয়ায় কাটা হচ্ছে সেটি জানে না বন বিভাগও। বিষয়টি জানার জন্য সাঘাটা উপজেলা বন কর্মকর্তা আব্দুল মান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, গাছগুলো বন বিভাগের না। কোন বিভাগের তাও তিনি জানেন না বলে জানান। তবে কেয়ার প্রজেক্টের মাধ্যমে গাছগুলো সড়ক ও জনপদ বিভাগ লাগিয়েছিল। গাছ কাটতে বন বিভাগের কোনো অনুমতি লাগে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাছ কাটতে হলে একটি কমিটির মাধ্যমে কাটতে হয়। সেই কমিটি হয়েছে কিনা আমি জানি না। তিনি বলেন, গাছ কেটে রাস্তায় পরিবহন করার জন্য বনবিভাগের অনুমোদন লাগে। কেউ অবৈধভাবে গাছ কেটে রাস্তায় পরিবহন করলে বনবিভাগ আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া-হাঁপানিয়া রাস্তার হাঁপানিয়া থেকে বাউলিয়া এলাকা পর্যন্ত রাস্তার গাছ কেটে রাস্তা দিয়েই নিয়ে যাচ্ছে বনবিভাগ কি ওই গাছগুলো ধরেছে বা মামলা দিয়েছে কি না ? তিনি উত্তরে বলেন, না। এদিকে বিভিন্ন দপ্তরে খোঁজ নিয়ে গাছ কাটার আইনের প্রক্রিয়ার অস্থিত্ব পাওয়া যায়নি। সাঘাটা উপজেলা প্রকৌশলী নয়ন রায় জানান, ‘সড়কটির প্রশস্তকরণ কাজ চলমান। গাছগুলো সড়ক থেকে অপসারণ করার জন্য জেলা পরিষদকে চিঠি দেয়া হয়েছে। সেই সুবাদে স্থানীয় প্রভাবশালী লোকজন নিয়মনীতির উপেক্ষা করে যে যারমতো করে গাছ গুলো কেটে নিয়ে যাচ্ছে।’
গাছ কেটে হরিলুট করে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা পরিষদের সদস্য শাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘গাছগুলো স্থানীয় লোকজন কেটে হরিলুট করে নিয়ে যাচ্ছে। যার যার জায়গার সামনে গাছ তারা নিজেরাই কেটে নিচ্ছে। আমি তাদের নামের তালিকা তৈরি করেছি এবং গাছ কাটা বন্ধের জন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।’