
রবিউল ইসলাম শাকিল

সফলতার সংজ্ঞা সবার কাছে এক না! কারো কাছে তা ভালো একটি ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়া, কারো কাছে ভালো একটি চাকরি পাওয়া, আবার কারো কাছে পরিবারের প্রত্যাশা পূরণ করাই জীবনের বড় অর্জন। এমনই এক তরুণের নাম সাজিদুর রহমান—যিনি একাধারে একজন সংগ্রামী, একাগ্র এবং স্বপ্নবাজ তরুণ।
বগুড়ার সোনাতলা নতুন বন্দরে জন্ম ও বেড়ে ওঠা সাজিদের। বাবা আব্দুল কাফী একজন ব্যবসায়ী, আর মা কাজল রেখা একজন গৃহিণী। একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা এই তরুণ ছোটবেলা থেকেই শিক্ষার প্রতি ছিলো আগ্রহী। টি এম মেমোরিয়াল একাডেমিতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে ভর্তি হন বগুড়া সরকারি কলেজে। পড়াশোনার পাশাপাশি এক অদৃশ্য চাপ সবসময় তাড়া করে ফিরেছে তাকে—ভালো একটি ভার্সিটিতে ভর্তি হতে হবে, নিজের স্বপ্ন পূরণের পথে পা বাড়াতে হবে।
তবে এই পথচলা মোটেই সহজ ছিল না। বুয়েট, রুয়েট, এমনকি সাস্টেও চান্স হয়নি তার। কুয়েটের মেরিট লিস্টে ৫৬৫০ নম্বরে থাকলেও এখনো ডাক আসেনি। এইসব ব্যর্থতা অনেককেই থামিয়ে দেয়, কিন্তু সাজিদ থেমে যাননি। চুয়েট এবং বুটেক্সে চান্স পেয়েছেন— ভর্তি হয়েছেন বুটেক্সে। এই প্রতিষ্ঠানই এখন তার সামনে নতুন পথের দরজা খুলে দিয়েছে।
সাজিদ জানান, “এডমিশন মানেই একটা যুদ্ধ। একটার পর একটা ব্যর্থতা আসতে পারে, কিন্তু তা যদি সহ্য করার মানসিকতা থাকে আর পরিবার পাশে থাকে, তাহলে সাফল্যও ধরা দেয়।” নিজের প্রাথমিক ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠে আজ তিনি নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবার, রিসার্চ করে বিদেশে যাওয়ার কিংবা ভালো কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করার।
এই স্বপ্নগুলো শুধু তার নিজের নয়, তার বাবা-মায়েরও। পরিবারের অক্লান্ত সহযোগিতা ছাড়া এই পর্যন্ত আসা সম্ভব হতো না বলেই বিশ্বাস করেন সাজিদ। তার গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সাফল্য শুধু মেধা নয়, তা ধৈর্য, অধ্যবসায় এবং পরিবারের ভালোবাসার ফলও।